এক হাতে ব্যাট, আরেক হাতে বল—দুই দিকেই যেন সমান জাদু মেহেদি হাসান মিরাজের! চট্টগ্রামের উইকেটে শতক হাঁকিয়ে ব্যাটে বাজিমাত করেছিলেন আগেই। এবার বল হাতে ফিরেই গুঁড়িয়ে দিলেন জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং লাইনআপ। ৫ উইকেট তুলে নিয়ে ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিলেন—তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে এক টেস্টেই সেঞ্চুরি ও ফাইফারের কৃতিত্ব তাঁর।
এই অলরাউন্ডারের অলৌকিক নৈপুণ্যে ইনিংস ও ১০৬ রানের বিশাল জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে সিরিজও হয়েছে ১-১ সমতায় শেষ।
বড় লিডের চাপে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে যেন তালগোল পাকিয়ে বসে জিম্বাবুয়ে ব্যাটিং। টাইগারদের হয়ে ইনিংসের সূচনা করেন প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নেওয়া তাইজুল ইসলাম। অধিনায়ক শান্ত তাঁর ওপরই আস্থা রাখেন এবং সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল না, তা বোঝাতে সময় নেননি বাঁহাতি স্পিনার।
ইনিংসের সপ্তম ওভারেই খোঁচা দিয়ে ব্রায়ান বেনেটকে ফেরান তাইজুল, দ্বিতীয় স্লিপে সাদমানের ঝাঁপানো ক্যাচে। এরপর একই ওভারে ফিরিয়ে দেন নিক ওয়েলচকে—এইবার রিভিউয়ে বদলে যায় আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত, উইকেট বাংলাদেশে।
প্রথম পরিবর্তন হিসেবে বোলিংয়ে এসে উইকেট তুলে নেন নাঈম হাসান। শন উইলিয়ামসকে টার্নে বিভ্রান্ত করে দ্বিতীয় স্লিপে সাদমানের হাতে আবারও ক্যাচ। মাত্র ২২ রানেই পড়ে যায় জিম্বাবুয়ের তিন উইকেট।
এরপর কিছুটা প্রতিরোধ গড়েছিলেন ক্রেগ আরভিন ও বেন কারান। কিন্তু, ৩০তম ওভারে মিরাজ ফিরে আসতেই বদলে যায় দৃশ্যপট। প্রথম বলেই আরভিনকে বোল্ড করেন, ওভারের শেষ বলে ফেরান মাদেভারেকে। সেখানেই থেমে থাকেননি মিরাজ। নিজের পরের ওভারে সিগাকে আউট করে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগান।
ধারাবাহিকভাবে উইকেট তুলে নিয়ে ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন এই অফ স্পিনার। মাসাকাদজা ও কারানকে ফিরিয়ে ইনিংস ফাইফার পূর্ণ করেন। একটি টেস্টে সেঞ্চুরি ও ৫ উইকেট—এই কীর্তি এর আগে বাংলাদেশ থেকে ছিল কেবল সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহর।
শেষ দিকে আবার বল হাতে ফিরেন তাইজুল। ৪৩তম ওভারে এনগারাভাকে ফেরান এবং এরপর মাসাকেসার রান আউটের মধ্য দিয়ে ৪৪.১ ওভারে ১২৮ রানে শেষ হয়ে যায় জিম্বাবুয়ের ইনিংস।
এই জয়ে বাংলাদেশ শুধু ম্যাচই জিতলো না, সিরিজটিও বাঁচালো গর্বভরে।